ব্রেকিং নিউজ
মাদারীপুরে র‌্যাবের অভিযনে লিবিয়ায় মানব পাচার চক্রের এক নারী সদস্য গ্রেফতার

মাদারীপুরে র‌্যাবের অভিযনে লিবিয়ায় মানব পাচার চক্রের এক নারী সদস্য গ্রেফতার

মাদারীপুর সদর উপজেলার শ্রীনদীহাট এলাকা থেকে লিবিয়ায় মানব পাচার চক্রের এক নারী সদস্য সুমি বেগমকে (৩৩) গ্রেফতার করেছে। এ নিয়ে র‌্যাব-৮ ও পুলিশের হাতে নারী দালালসহ ১২ আসামি গ্রেফতার হলো।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র‌্যাব ৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের অধিনায়ক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৮ জানতে পারে যে, দীর্ঘদিন যাবৎ একটি আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্র ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মোটা অংকের বেতনের চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে মানব পাচার করছে। উক্ত চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশ, লিবিয়া ও ইতালিতে সমভাবে সক্রিয়। এদের শিকার মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের উঠতি বয়সের বেকার যুবকরা। চক্রটি বাংলাদেশ থেকে প্রাথমিকভাবে যুবকদের লিবিয়ায় পাচার করে থাকে। তৎপরবর্তীতে লিবিয়ায় অবস্থানরত চক্রের সদস্যরা লিবিয়ার বন্দিশালায় তাদেরকে আটক রেখে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এবং উক্ত বন্দীদের নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। টাকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে তাদেরকে লিবিয়া হতে নৌকাযোগে অবৈধ পন্থায় ইতালিতে গমনের সুযোগ করে দেয়া হয়। ক্ষেত্র বিশেষে বন্দীপ্রতি উক্ত চক্রটি পাঁচ থেকে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ আদায় করে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৮ এর একটি চৌকষ দল তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার সময় মাদারীপুর সদর উপজেলার শ্রীনদীহাট গ্রাম হতে সামাদ ফকিরের স্ত্রী সুমি বেগম (৩৩) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে উক্ত চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেন। সুমি বেগম তার এলাকায় দালাল চক্রের মূলহোতা কুদ্দুস (৩৮) এর সাথে যোগসাজসে অবৈধভাবে লিবিয়ায় বাংলাদেশ হতে বিভিন্ন উপায়ে মানব পাচার করে। সুমি বেগম বাংলাদেশ হতে লিবিয়ায় মানব পাচারের যাবতীয় আর্থিক লেনদেন ও লোক সংগ্রহের কাজ সম্পাদন করে।

আটককৃত আসামিকে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। মানব পাচার চক্রের অন্যান্য সক্রিয় সদস্যদের গ্রেফতারে র‌্যাব-৮ এর অপারেশন তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

র‌্যাব আরো জানায়, গত ২৮ মে ২০২০ইং তারিখে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলির দক্ষিণ শহর মিজদায় আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্র অভিবাসন প্রত্যাশিদেরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ না পাওয়ায় ২৬ জন বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে এবং ১১ জন বাংলাদেশিকে গুরুতর আহত করে। বিষয়টি র‌্যাব-৮ এর নজরে আসলে র‌্যাব-৮ এর অধীনে ১১টি জেলার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট মানব পাচারকারীদের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে দ্রুত গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

---------